সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ অপরাহ্ন
শ্রীমঙ্গল ( মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি, কালের খবর :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মাধ্যমিক শ্রেণির সরকারি ৮শ’ কেজি বই কেজি দরে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বইগুলি শ্রীমঙ্গল উপজেলার ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ভূনবীর দশরথ হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক স্তরের জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রণীত ৬ম থেকে ১০ম শ্রেনীর বইগুলো ভাঙ্গারি হিসেবে শ্রীমঙ্গলের একটি খুচরা ভাসমান ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে দেন ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ঝলক চক্রবর্তী।
ফেরিওয়ালা বইগুলো শ্রীমঙ্গল শহরের পূরান বাজার সড়কের চিত্রালী সিনেমা হল সংলগ্ন ইউসুফ আয়রন মার্ট নামে একটি খুচরা ভাঙ্গারি দোকানে বেশি দামে বিক্রি করে দেয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই দোকানে গিয়ে শ্রমিকরা বইগুলো ওজন মাপার যন্ত্রে মেপে মেপে গুদামজাত করতে দেখা যায় । বইগুলোর মধ্যে রয়েছে- মাধ্যমিক স্তরের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ বিজ্ঞান, ইসলাম ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা, গাহস্থ বিজ্ঞান, কৃষি শিক্ষা, পৌরনীতিসহ বিভিন্ন বিষয়ের বই। বইগুলো পরীক্ষা করে দেখা গেছে এর মধ্যে ২০২০ ইং শিক্ষা বর্ষের নতুন বই ও ২০১৯ ইং শিক্ষা বর্ষের পুরাতন উইপোকায় নষ্ট হওয়া কিছু বই।
ইউসুফ আয়রন মার্টের মালিক ইউসুফ জানান, তিনি ফেরিওয়ালার কাছ থেকে ৮শ’ কেজি বই ১২ টাকা দরে ক্রয় করেছেন।
বিদ্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ওই বিদ্যালয়ের প্রহরী রাম গোপাল দাশ এসকল বই গুলো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করে। তবে তিনি বলেন,প্রধান শিক্ষকের নির্দেশেই বইগুলো বিক্রি করেছেন।
রামগোপাল দাশ জানান, প্রধান শিক্ষক পুরাতন বইগুলো বিক্রয় করে কক্ষ পরিস্কার করার জন্য বলায় তিনি এসব বই বিক্রি করে দেন৷
এ ব্যাপারে ভূনবীর দশরথ হাই স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ঝলক চক্রবর্তী বলেন, ‘স্কুলের দপ্তরিকে বলেছিলাম যে স্কুলের কিছু পুরাতন বই উইপোকায় কেটে ফেলেছে। সেসব নষ্ট বই ও কিছু ব্যবহৃত কাগজপত্র বিক্রি করে দেয়ার জন্য। দপ্তরি সেই বইগুলোর সাথে ভুলক্রমে ২০২০ ইং সালের বই বিক্রি করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ বর্ধন জানান, কোন বিদ্যালয় থেকে সরকারি বই এভাবে কেজি দরে বিক্রি করার নিয়ম নেই। যে বইগুলো অবন্টনকৃত থাকে সে বইগুলো উপজেলা মাধ্যমিক বই বিতরণ,গুদামজাতকরণ ও সংরক্ষণ কমিটির নিকট জমা দিতে হয়। পরে এগুলো দরপত্র আহ্বান করে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে।
শ্রীমঙ্গলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি৷ তবে সরকারী বই কেজি দরে বিক্রি করার নিয়ম নেই। কোন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এভাবে বই বিক্রি করতে পারেন না। তদন্ত সাপেক্ষে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।